সিরিয়ায় জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটস তথা আইএসে যোগ দিতে যাওয়া পাঁচ নারীকে দেশে ফেরাল জার্মান সরকার। ইংল্যান্ড তার নিজস্ব নাগরিকদের এইএস সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে দেশে ঢুকতে প্রতিবন্ধকতা আরোপ করেছিল। কিন্তু জার্মান সরকার সে পথে হাঁটেনি। যত বড় অপরাধীই হোক, কাউকে রাষ্ট্রহীন করে দেওয়ার অধিকার কারোই নেই, এই নীতির প্রতি সম্মান দেখিয়েই জার্মানি তার আইএসে যাওয়া নাগরিকদের দেশে ফেরাতে শুরু করল।
প্রথম দফায় পাঁচ নারী এবং ১৮টি শিশুকে দেশে ফেরালো জার্মান সরকার। সিরিয়ার যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পাঁচ আইএস নারী এবং ১৮টি শিশুকে উদ্ধার করে জার্মানিতে ফিরিয়ে আনল জার্মান সরকার। সম্প্রতি জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস সংবাদমাধ্যমকে এ কথা জানিয়েছেন। অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে এই কাজটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাস। যে পাঁচ নারীকে দেশে ফেরানো হয়েছে, তাদের সকলের বিরুদ্ধেই চরমপন্থা এবং জঙ্গি কার্যকলাপে অংশগ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। সবার বিরুদ্ধেই চার্জ গঠন করেছে দেশের ফেডারেল পুলিশ।
গত কয়েক বছরে একাধিক জার্মান সিরিয়ায় গিয়েছিলেন আইএস শিবিরে যোগ দিতে। এই পাঁচ নারীও সিরিয়ায় গিয়ে আইএস জঙ্গিদের বিয়ে করেছিলেন বলে জার্মান সরকার জানিয়েছে। পাঁচ নারীর কারো সম্পূর্ণ পরিচয় জানানো হয়নি। কেবল নামের প্রথম অংশটি লেখা হয়েছে রিপোর্টে। সিরিয়ায় আইএস শিবিরে যোগ দিলেও পরবর্তী সময় এই নারীরা সকলেই ছিলেন কুর্দদের তৈরি ক্যাম্পে। উত্তর পূর্ব সিরিয়ায় একাধিক ক্যাম্প তৈরি করেছে কুর্দ যোদ্ধারা। আটক আইএস-দের সেখানে রাখা হয়। দশ হাজারেরও বেশি নারী এবং শিশু আছে ওই ক্যাম্পগুলিতে।
যে নারীদের জার্মানি ফিরিয়েছে, তারাও ওই ক্যাম্পেই ছিলেন এতদিন। কুর্দ যোদ্ধাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১৮টি শিশুও ওই ক্যাম্পেই ছিল। তাদের পরিবারও জার্মান। এখনো সিরিয়ায় অসংখ্য জার্মান শিশু এবং নারী আছে বলে জার্মান পত্রপত্রিকার দাবি।
প্রাথমিকভাবে জার্মান সরকার আইএস শিবিরে যোগ দেওয়া জার্মান নারীদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে খুব উৎসাহী ছিল না। চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও এ বিষয়ে উৎসাহ দেখাননি। কিন্তু বিভিন্ন অধিকাররক্ষা সংগঠনের চাপে শেষ পর্যন্ত ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করতে বাধ্য হয় জার্মান সরকার।
মাস জানিয়েছেন, বহু দিন ধরে সিরিয়ার কুর্দ যোদ্ধাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে এবং ফিনল্যান্ডের সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করে চার্টার বিমানে করে নারী ও শিশুদের ফেরানো সম্ভব হয়েছে। যে শিশুদের উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের অনেকেই অনাথ। বেশ কয়েকজন অসুস্থ। তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আগামী দিনে আরো নারী ও শিশুকে ফেরানো হবে বলেই ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তবে এখনই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি জার্মান সরকার। বস্তুত, সিরিয়া থেকে ফেরানো হলেও ওই নারীদের সঙ্গে আইএস-এর সরাসরি যোগের কথাও জানায়নি সরকার। তবে পত্রপত্রিকাগুলি দাবি করেছে পাঁচ নারীর সঙ্গেই আইএস যোগ ছিল। পুলিশের রিপোর্টেও সে কথা বলা হয়েছে।
এসডাব্লিউ/বিটি/আরা/১২৫০
আপনার মতামত জানানঃ