অবাধ তথ্য প্রবাহের বিশ্বে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলগণ ক্রমশ উল্টো পথে হাঁটছে বলে মন্তব্য করেছেন ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর সভাপতি প্রফেসর ডা. হারুন আল রশিদ ও মহাসচিব ডা. মো. আব্দুস সালাম। আজ রোববার (১১ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই মন্তব্য জানানো হয়।
পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালগুলো থেকে গণমাধ্যমে তথ্য প্রদান না করতে সিভিল সার্জনের চিঠির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ড্যাব।
বিবৃতিতে ড্যাব সভাপতি ও মহসাচিব বলেন, তথ্য প্রকাশ করা সাংবাদিকদের অধিকার এবং তথ্য পাওয়া, জানা মানুষের সাংবিধানিক অধিকার, অবাধ তথ্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে দূর্নীতি রোধ করতে সহায়তা করে; কিন্তু সরকার একদিকে দূর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কথা বলে।
অন্যদিকে সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে, এটা দ্বিমুখী নীতির বহিঃপ্রকাশ এবং সত্যিকার অর্থে দুর্নীতি দমনের মিথ্যা আশ্বাস মাত্র। প্রকৃতপক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
ড্যাব নেতৃবৃন্দ নিবন্ধন ব্যতীত বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্রে কোভিড টিকা দেয়ার তীব্র সমালোচনা করেন এবং অনতিবিলম্বে এই ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
চিকিৎসক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে একযোগে ১ হাজার ২০০ জন চিকিৎসক (সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, প্রভাষক) বদলির তীব্র বিরোধিতা করে বলেন করোনা মহামারী শুরুর পর থেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সমন্বয়হীন কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে।
যার অন্যতম প্রমাণ সর্বশেষ বদলীর আদেশ, যাতে মৃত্যুবরণকারী ও অবসরে যাওয়া চিকিৎসকদের নামও আছে। তারা এই আদেশ অবিলম্বে বাতিল করার দাবী জানান।
তারা বলেন, করোনাকালীন সময়ে জনগণের সুচিকিৎসার নিমিত্তে প্রয়োজনে ৪২তম বিসিএস এর লিখিত পরীক্ষায় ইতোমধ্যে উত্তীর্ণদের স্বল্পতম সময়ের মধ্যে মৌখিক পরীক্ষা শেষ করে নিয়োগের সুপারিশ করা হোক। কারণ প্রমাণিত করোনার প্রকোপ ক্রমবর্ধমান এবং তা ক্রমশ ভয়াবহতার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এমতাবস্থায় স্থায়ী ও দক্ষ জনবল ব্যতীত মহামারী সামাল দেয়া অসম্ভব।
এদিকে, গত বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে সরকারি বাসভবন থেকে অনলাইনে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে তথ্য অধিদপ্তর সংকলিত ‘অনশ্বর বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচনকালে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদের মতে বাংলাদেশে গণমাধ্যম যে পরিমাণ ‘স্বাধীনতা ভোগ করে’ তা অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্য উদাহরণ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণমাধ্যম যে পরিমাণ স্বাধীনতা ভোগ করে এই ধরণের স্বাধীনতা কোনো উন্নয়নশীল দেশে ভোগ করে না। আর যে সমস্ত দেশ থেকে এ ধরনের বিবৃতি বা রিপোর্ট দেআ হয়, সেই সমস্ত দেশে গণমাধ্যমের যে পরিমাণ জবাবদিহিতা আছে, আমাদের দেশে সেটি নেই।
সেখানে যে কোনো ভুল সংবাদ পরিবেশন করলে মোটা অংকের জরিমানা গুণতে হয়। ভুল বা অসত্য সংবাদ পরিবেশনের জন্য অনেক সময় পত্রিকা বন্ধ হয়ে যায়, যেমন শতবছরের নামী পত্রিকা নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড এর ক্ষেত্রে হয়েছে। অনেক সময় টেলিভিশনের পুরো টিমকে পদত্যাগ করতে হয়, যেমন বিবিসির ক্ষেত্রে হয়েছে। আমাদের দেশে সেটি হয় না৷
এসডব্লিউ/এমএন/ডব্লিউজেএ/২১২০
আপনার মতামত জানানঃ