বিশ্বের অন্যতম টেক জায়ান্ট গুগল ও আমাজন এখন বাংলাদেশের নিবন্ধিত ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠান। এই দুটি প্রতিষ্ঠান আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেট থেকে অনাবাসী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যবসায় নিবন্ধন নম্বর (বিআইএন) নিয়েছে, যা ভ্যাট নিবন্ধন হিসেবে পরিচিত। গত ২৩ মে গুগল এবং ২৭ মে আমাজন এ ভ্যাট নিবন্ধন পেয়েছে। এখন থেকে এ দুটি প্রতিষ্ঠান নিয়মিত ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করে ভ্যাটের টাকা পরিশোধ করবে।
অবশ্য এতদিনও প্রতিষ্ঠান দুটি ভ্যাটের টাকা পরিশোধ করত। বাংলাদেশ থেকে যে ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের টাকা পরিশোধ হত, সেই ব্যাংকই ভ্যাট কেটে রেখে সরকারি কোষাগারে জমা দিত। শুধু গুগল, আমাজন নয়; শিগগিরই ফেসবুক ও নেটফ্লেক্স ভ্যাট নিবন্ধন নিতে যাচ্ছে বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, গুগল এশিয়া প্যাসিফিক পিটিই লিমিটেড নামে ভ্যাট নিবন্ধন নিয়েছে। ব্যবসার ধরন হিসেবে বলা হয়েছে সেবা। আর সিঙ্গাপুরের আঞ্চলিক কার্যালয়ের ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যদিকে আমাজন নিবন্ধিত হয়েছে আমাজন ওয়েব সার্ভিসেস ইনকরপোরেশন নামে। এই প্রতিষ্ঠান সেবাধর্মী ব্যবসা করবে বলে জানিয়েছে। আমাজন যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলের ঠিকানা ব্যবহার করেছে।
অনাবাসী প্রতিষ্ঠান হলেও এ দেশে তাদের পক্ষে ভ্যাট পরামর্শক হিসেবে কাজ করবে প্রাইসওয়াটারহাউসকুপারস বাংলাদেশ। প্রতিষ্ঠানটি গুগল ও আমাজনের পক্ষে ভ্যাট রিটার্ন দাখিল তৈরিসহ ভ্যাট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ রক্ষায় সহায়তা করবে।
ঢাকা দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার এস এম হুমায়ুন কবির গণমাধ্যমকে বলেন, অনাবাসী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এ দেশে ব্যবসা করছে গুগল ও আমাজন। এখন তারা পুরোপুরি ভ্যাট আইনের আওতায় এল। অন্য ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠানের মতো ওই প্রতিষ্ঠান দুটি রিটার্ন দাখিল করবে। আবার ভ্যাটের আইনি সুরক্ষাও পাবেন।
জানা গেছে, ভ্যাট নিবন্ধন নেওয়ার আবেদনপত্রে গুগল ও আমাজনের ব্যাংক হিসাব, ট্রেড লাইসেন্স ও আয়-ব্যয়ের হিসাবের তথ্য জানিয়েছে।
প্রাইসওয়াটারহাউসকুপারস বাংলাদেশের ম্যানেজিং পার্টনার মামুন রশীদ বলেন, ‘এনবিআর বিশেষ করে পূর্বের চেয়ারম্যান এবং বর্তমান চেয়ারম্যান, মেম্বার ভ্যাট ও তার সহকর্মীদের ধন্যবাদ। তারা প্রায় ১৮ মাস প্রচুর কাজ করেছেন এসব বৈশ্বিক কোম্পানির নিয়ম মেনে কাজ করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। ধন্যবাদ আইসিটিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারকেও এ ক্ষেত্রে সহায়তার জন্য। সঠিকভাবে ভ্যাট প্রদানের জন্য ছোটখাটো কিছু সমস্যা এখনো রয়ে গেছে। আমরা আশাবাদী আস্তে আস্তে এনবিআর এগুলো দূর করার ক্ষেত্রেও সমধিক তৎপর হবেন।’
এদিকে, ফেসবুকও শিগগিরই ভ্যাট নিবন্ধন নিতে যাচ্ছে। ওটিটি প্লাটফর্ম নেটফ্লিক্সের ভ্যাট নিবন্ধনের বিষয়ে আলোচনা চলছে। আগামী ১ মাসের মধ্যে তাদের ভ্যাট নিবন্ধন দেয়া হতে পারে। প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপারস বাংলাদেশ এই দুটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে। এছাড়া ভারতের ওটিটি প্লাটফর্ম হইচইকে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনতে আলোচনা চলছে।
জানা গেছে, ভ্যাট সেবা পেতে গুগল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো ২০১৯ সাল থেকেই চেষ্টা করছিল। ভ্যাট আইন অনুসারে সরাসরি এ সেবা পাওয়ার বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে দাবি ছিল। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে বিদেশি সংস্থাগুলোকে ভ্যাটের সেবা পেতে ভ্যাট এজেন্ট নিয়োগ করতে হয়েছিল।
এ বিষয়ে সংস্থাগুলো এনবিআরকে বেশ কয়েকটি চিঠি দেয়। এতে তারা ভ্যাট দেয়ার বিষয়ে সরাসরি সেবা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশে স্থায়ী অফিস না থাকায় বিষয়টির সুরাহা হয়নি।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৯০৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ