বিজ্ঞান সবসময় আমাদের শেখায়, মস্তিষ্ক ছাড়া জীবনের অস্তিত্ব কল্পনাই করা যায় না। কিন্তু প্রকৃতি যেন বারবার তার নিয়ম ভেঙে আমাদের চমকে দেয়। হ্যাঁ, সমুদ্রের গভীরে রয়েছে এমন কিছু প্রাণী যারা একেবারেই ‘ব্রেইন’ ছাড়া বেঁচে থাকে, চলাফেরা করে, এমনকি আত্মরক্ষাও করে! অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, এই প্রাণীগুলোর জীবনযাপন আমাদের বুদ্ধিমত্তা আর টিকে থাকার ধারণাকেই নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে। চলুন জেনে নিই সেই ৫টি আশ্চর্য সমুদ্র প্রাণীর কথা, যারা ব্রেইন ছাড়াও দিব্যি দিবানিশি বেঁচে আছে:
সি আর্চিন (Sea Urchin)
কাঁটায় ঢাকা এই ছোট্ট প্রাণীটি মস্তিষ্ক ছাড়াই বেশ চালাক! এরা সামুদ্রিক পাথর স্ক্র্যাপ করে শৈবাল খায় এবং শরীরের নিচের দিকে মুখ, আর ওপরের দিক দিয়ে বর্জ্য নির্গত করে। চলাফেরা করে পানির ভিতরে নিজস্ব ‘ওয়াটার ভাসকুলার সিস্টেম’-এর মাধ্যমে।
সি কিউকাম্বার (Sea Cucumber)
নামটা যত নিরীহ শোনায়, এরা কিন্তু বিপজ্জনকও হতে পারে! ব্রেইন নেই বটে, কিন্তু টক্সিক পদার্থ ছাড়তে এরা ওস্তাদ। plankton খেয়েই চলে এদের দিন, আর বিপদে পড়লে এমন টক্সিন ছাড়ে যা মানুষকেও ক্ষতি করতে পারে।
জেলিফিশ (Jellyfish)
স্বচ্ছ শরীর আর মৃদু ভাসমান গতি নিয়ে জেলিফিশ দেখতে যতটা সুন্দর, ততটাই আশ্চর্য এদের জীবনযাপন। এরা মস্তিষ্ক ছাড়াই নিজেদের চলাফেরা করে, এমনকি শিকার ধরতেও সক্ষম! শরীর সংকোচন-প্রসারণ করে পানি ছুড়ে এগিয়ে চলে, শিকার ধরে আর শত্রুর হাত থেকে বাঁচে।
কোরাল (Coral)
অনেকে একে গাছ ভাবেন, কিন্তু এটা আসলে একধরনের প্রাণী! জেলিফিশের আত্মীয় এই প্রাণীটিও ব্রেইন ছাড়াই টিকে থাকে এবং শত্রু প্রতিরোধে বিষাক্ত ডাঁশ ব্যবহার করে। সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের জন্য কোরাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
স্টারফিশ (Starfish)
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, এই তারার মতো দেখতে প্রাণীটিরও কোনো ব্রেইন নেই! এরা সমুদ্রের তলদেশে থাকে এবং তাদের বাহুতে থাকা ক্ষুদ্র চোখ দিয়ে আলো ও আশপাশের বিপদ বুঝে চলাফেরা করে। সি আর্চিনের মতোই এরা ইকিনোডার্ম পরিবারভুক্ত।
প্রকৃতির বিস্ময় সীমাহীন। মস্তিষ্ক ছাড়াও প্রাণীরা কিভাবে টিকে থাকতে পারে, তা যেন এক অনন্য উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই সমুদ্র প্রাণীগুলি। বিজ্ঞান এখনও এদের জীবনযাপন পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারেনি—আর তাতেই রয়েছে প্রকৃতির আসল সৌন্দর্য।
আপনার মতামত জানানঃ