বাংলাদেশ সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় অন্তত ১২টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ ফাঁড়ি বসানোর ঘোষণা দিয়েছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। গতকাল শুক্রবার তিনি এই ঘোষণা দেন। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোতে দাবি করা হয়েছে, আসামে বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ বেড়ে গেছে। এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই আসাম রাজ্য সরকার এ ঘোষণা দিল।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য স্টেটসম্যানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন, তাঁর সরকার বাংলাদেশ সীমান্তসংলগ্ন জেলাগুলোতে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১২টি নতুন পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে।
দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কাজ করা ভারতের কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানো, আইন প্রয়োগকে শক্তিশালী করা এবং সীমান্তের নজরদারি উন্নত করার লক্ষ্যে এসব পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হবে। আর এ লক্ষ্যেই নতুন করে ১২টি সীমান্ত পুলিশ ফাঁড়ি বসানো হবে। বর্তমানে আসাম-বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছাকাছি ৯টি সীমান্ত পুলিশ ফাঁড়ি কাজ করছে
নতুন এসব পুলিশ ফাঁড়ি আসামের বাংলাদেশ সীমান্তসংলগ্ন জেলা কাছাড়, করিমগঞ্জ, ধুবরি ও দক্ষিণ শালমারায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, এসব পুলিশ ফাঁড়ি শক্তিশালী সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।
এদিকে, গত দুই মাসে আসাম পুলিশ ১৩০ জনের বেশি অনুপ্রবেশকারীকে আটক করেছে। সর্বশেষ অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে গত ২২ অক্টোবর। এ সময় আসাম পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। তাদের নাম—হাসমত আলী, বিথি খাতুন এবং রিমা খাতুন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা রাজ্য পুলিশের দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন। বলেছেন, সীমান্তের অবকাঠামো সম্প্রসারণের এই পদক্ষেপ আসামে অবৈধ প্রবেশের বিরুদ্ধে বাড়তি সতর্কতা গ্রহণের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন এবং রাজ্যের সীমান্ত সুরক্ষার চলমান প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করে।
মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বশর্মা জোর দিয়ে বলেন, এই পদক্ষেপ আসামের সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রসঙ্গত, আসাম আর বাংলাদেশের মধ্যে অনেকটা এলাকাই নদী সীমান্ত, আর সেখানে বিএসএফের ভাসমান প্রহরা আর সীমান্ত চৌকি থাকলেও সেখান দিয়ে চোরা চালান, অনুপ্রবেশ আর মৌলবাদে অনুপ্রাণিত ব্যক্তিরা আসামে প্রবেশ করে বলে বিজেপি সহ আসামের বেশ কিছু রাজনৈতিক দল নিয়মিত অভিযোগ করে থাকে। বাংলাদেশ থেকে আসলে কত অনুপ্রবেশ ঘটেছে, তা নিয়ে বহু মত রয়েছে আসামে।
প্রথমে লক্ষ লক্ষ অনুপ্রবেশকারী আসামে ঢুকে পড়েছেন বলে প্রচার করা হয়েছিল এক সময়ে। মূলত বাংলাভাষী নাম, বিশেষ করে বাংলাভাষী মুসলমান নাম দেখলেই তাদের ভোটার তালিকায় সন্দেহজনক ভোটার বলে চিহ্নিত করা হত আর তাদের বিদেশী ট্রাইবুনালে পাঠানো হত।
বিদেশী ট্রাইবুনালগুলোতে বিচারের পরে ‘ডাউটফুল ভোটার’-এর সেই তালিকা দেড় দশক পরে মাত্রই কয়েক হাজারে নেমে এসেছে। অর্থাৎ বাকিরা নিজের ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে পেরেছেন ট্রাইবুনালের কাছে
আপনার মতামত জানানঃ