কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে এখনও বিশ্বজুড়ে সপ্তাহে প্রায় ১৭০০ মানুষ মারা যাচ্ছে বলে উদ্বেগ জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সেইসঙ্গে অবিলম্বে মানুষকে এই রোগের টিকা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
সংস্থাটির মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস ভ্যাকসিনের কভারেজ হ্রাসের বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তথ্যগুলো দেখায় স্বাস্থ্যকর্মী এবং ৬০ বছরের বেশি মানুষের মধ্যে ভ্যাকসিনের কভারেজ হ্রাস পেয়েছে, এই দুটি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠী।’
সংস্থাটি সুপারিশ করেছে, সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর মানুষদের শেষ ডোজ নেয়ার ১২ মাসের মধ্যে অবশ্যই একটি কোভিড -১৯ ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে কোভিড-১৯-এ ৭ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর নথিভুক্ত করা হয়েছে। যদিও মহামারীতে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি বলে মনে করা হয়।
একইসঙ্গে ভাইরাস নজরদারি এবং সিকোয়েন্সিং বজায় রাখতে সাশ্রয়ী মূল্যে নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা, চিকিৎসা ও সবার জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিত করার জন্য বিশ্বের সরকারগুলোর প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
কোভিড-১৯ অর্থনীতি এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে পঙ্গু করে দিয়েছে। টেড্রোস ২০২৩ সালের মে মাসে একটি আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য জরুরি হিসেবে কোভিড-১৯ -এর সমাপ্তি ঘোষণা করেছিলেন, ২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনের উহানে ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত হওয়ার তিন বছরেরও বেশি সময় পরে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভাইরাস নজরদারি ও সিকোয়েন্সিং বজায় রাখতে এবং সাশ্রয়ী মূল্যের ও নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা, চিকিৎসা এবং ভ্যাকসিনের অ্যাক্সেস নিশ্চিত করার জন্য সরকারগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত হুনান সি-ফুড মার্কেটে প্রথম করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটে। এরপর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা মহামারিতে মারা গেছেন ৭০ লাখেরও বেশি মানুষ। যদিও এই মহামারিতে প্রাণ হারানো মানুষের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে মনে করা হয়। মানুষের প্রাণ কাড়ার পাশাপাশি কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্বের অনেক দেশের অর্থনীতিকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে, পঙ্গু করে দিয়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে।
ভাইরাসটি শনাক্ত হওয়ার তিন বছরেরও বেশি সময় পরে ২০২৩ সালের মে মাসে করোনাভাইরাস মহামারি আর ‘বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা’ নয় বলে ঘোষণা করেছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস।
পরে একই মাসে ডব্লিউএইচও প্রধান অবশ্য বলেছিলেন, ‘বিশ্বব্যাপী করোনা সম্পর্কিত স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার সমাপ্তি ঘোষণা করা হলেও তা বিশ্বব্যাপী এই ভাইরাসের স্বাস্থ্য হুমকির সমাপ্তি নয়। বিশ্বে করোনাভাইরাসের আরেকটি ভ্যারিয়েন্ট উদ্ভূত হওয়ার হুমকি এখনও রয়ে গেছে, যা নতুন করে এই রোগ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়াতে পারে। এছাড়া নতুন করে আরও রোগজীবাণু উদ্ভূত হওয়ার মারাত্মক হুমকি এখনও রয়ে গেছে।’
আপনার মতামত জানানঃ