ময়মনসিংহের নান্দাইলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ময়মনসিংহ-৯ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিনের ছবির সাথে এক নারীর আপত্তিকর ছবি জুড়ে দিয়ে কটুক্তি করার অভিযোগে মেহেদী হাসান সুমন (৩০) নামে এক ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা হয়েছে।
পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) আদালতে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় আরও অজ্ঞাতনামা দুই-তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। জানা গেছে, মেহেদী হাসান সুমন সিংরইল ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের মোক্তার হোসেনের পুত্র। সে স্থানীয় ছাত্রদল নেতা।
মামলার বাদী সিংরইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রহুল আমীন গণমাধ্যমকে বলেন, ওই ছাত্রদল নেতা ফেসবুকে এমপি তুহিনের সাথে এক নারীর আপত্তিকর ছবি জুড়ে দিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছে। এছাড়া সদ্য মেয়র নির্বাচনের ফলাফলকে প্রশ্নবিদ্ধ করে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। এজন্য এমপি তুহিনের রাজনৈতিক ও সামাজিক সুনাম মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্য হয়েছে। তাই মেহেদী হাসান সুমনের নাম উল্লেখ করে বুধবার রাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।
নান্দাইল থানার ওসি মিজানুর রহমান আকন্দ মামলা রুজু করার সত্যতা নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, মিথ্যা মানহানিকর তথ্য প্রকাশ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অপরাধে (২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশ্লিষ্ট ধারা) মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার যেই যুবকের ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে হামলা হয়, সেই ঝুমন দাস আপনের (২৩) বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। শাল্লা থানায় দায়ের করা এই মামলার বাদী হয়েছেন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল করিম। শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বৃহস্পতিবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওসি জানান, কেন্দ্রীয় হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে নিয়ে ফেসবুকে অশ্লীল পোস্ট করায় ঝুমন দাসকে গত মঙ্গলবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এর আগে গত ১৬ মার্চ রাতে আটকের পর তাঁকে গত ১৭ মার্চ ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত সেদিন তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় শানে রিসালাত সম্মেলনে লক্ষাধিক মানুষের সামনে বক্তব্য দেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতারা। সেই সূত্র ধরে পাশের শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের ঝুমন দাস আপন তাঁর ফেসবুকে মাওলানা মামুনুল হককে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেন বলে দাবি করা হয়। এক পর্যায়ে ঝুমনকে খুঁজে বের করে গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশে দেয় লোকজন। এরপরও লোকজন শান্ত না হয়ে গত বুধবার সকাল থেকে লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নোয়াপাড়া গ্রাম ঘিরে রাখে। পরে তারা বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে প্রথম মামলাটি করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় দিরাই উপজেলার সরমঙ্গল ইউপির সদস্য নাচনী গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম স্বাধীন মিয়াকে। তিনি ওই ইউনিয়নের ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি বলে জানা গেছে। তবে স্বাধীন মিয়া যুবলীগের কেউ নন বলে দাবি করছেন জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক খায়রুল হুদা চপল।
এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও দেড় হাজার জনকে আসামি করে পুলিশের পক্ষ থেকে অপর মামলাটি করা হয়। পুলিশের করা মামলার বাদী হয়েছেন শাল্লা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল করিম।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৪১১
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ