বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি থাকার পরও ভারতের অর্থনৈতিক গতি নিয়ে ইতিবাচক পূর্বাভাস দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। কেউ কেউ মনে করছেন, সদ্য শুরু হওয়া বছরে ভারত বৈশ্বিক অর্থনীতির কেন্দ্রে পরিণত হতে যাচ্ছে। খবর দ্য ন্যাশনাল নিউজ।
ভারত ২০২৩ সালে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হিসেবে চীনকে পেছনে ফেলেছে। দেশটির জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪৪ কোটিতে। মধ্যবিত্ত শ্রেণীর আয় বৃদ্ধি ও কর্মক্ষম তরুণ জনগোষ্ঠী বেশি থাকার সুবিধা পেতে যাচ্ছে দেশটি। ফলে ঊর্ধ্বমুখী থাকবে ভোক্তা ব্যয়।
মুম্বাইভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যাংক ইকুইরাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভবেশ শাহ বলেন, ‘২০২৪ সালে প্রবৃদ্ধি বিবেচনায় ভারত এগিয়ে থাকবে। সরকারের ব্যয় ও অভ্যন্তরীণ বাজারে ভোক্তা ব্যয়ের কারণে প্রবৃদ্ধির গতি থাকবে স্থিতিশীল।’
সর্বশেষ অর্থনৈতিক পূর্বাভাসে গোল্ডম্যান স্যাকস দাবি করেছে, ২০২৪ সালে ১৩টি বড় অর্থনীতির দেশের মধ্যে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থাকবে সবচেয়ে বেশি। ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার থাকবে ৬ দশমিক ২ শতাংশ। ৪ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে এর পেছনে থাকবে চীন। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘যদিও খাদ্য ও জ্বালানি সরবরাহের সংকট মূল্যস্ফীতিকে এখনো নাগালের বাইরে রেখেছে। তার পরও ভারতের প্রবৃদ্ধি থাকবে স্থিতিশীল ও সন্তোষজনক।’
গোল্ডম্যান স্যাকসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সান্তনু সেনগুপ্ত ও অর্জুন বর্মা মনে করেন, সরকার যেহেতু খাদ্য ও গ্যাসের মতো বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছে, ফলে ভোক্তা ব্যয় ২০২৪ সালজুড়েই থাকবে ইতিবাচক। গত ১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) জানায়, ভারতের প্রবৃদ্ধি শক্তিশালী থাকবে। প্রতিষ্ঠানটির দেয়া পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত অর্থবছরে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থাকবে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ।
২০২৩ সালেও ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল সন্তোষজনক। সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে প্রত্যাশার তুলনায় দ্রুত বেড়েছে। প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ৬ শতাংশ। এ প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে শিল্পোৎপাদন খাত ও সরকারের দেয়া ভর্তুকি। ফলে ভারত বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক হয়ে দাঁড়িয়েছে। চীনের প্রবৃদ্ধিতে ধীর গতি ও পশ্চিমা দেশগুলো যখন উচ্চ সুদহারের মতো প্রতিবন্ধকতা কাটানোর চেষ্টা করছে, ঠিক সেই সময়ে ভারতের জন্য এটা সুখবর।
অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা চোখ রেখেছেন আগামী নির্বাচনের দিকে। প্রাদেশিক নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বিজেপির জয় একটা সম্ভাবনা তুলে ধরেছে। বিজেপি খুব সম্ভবত তৃতীয় দফার মতো ক্ষমতায় আসবে।
ক্ষমতাসীন দলই আরো একদফা ক্ষমতায় এলে নীতিগত পরিবর্তন খুব বেশি হবে না। এটিকেও গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
আপনার মতামত জানানঃ