প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না- উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যত ষড়যন্ত্র হোক, বিদেশি শক্তির চাপ আসুক, আমরা সংবিধানের বাইরে যাবো না। গতকাল ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে ‘শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস’- উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনাকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। বাংলাদেশের জন্মের চেতনা, মুক্তিযুদ্ধ ও জয় বাংলার চেতনা, সংবিধান নিয়ন্ত্রণ করে শেখ হাসিনাকে। দেশি-বিদেশি কোনো শক্তি নয়। যত ষড়যন্ত্র করুক, বিদেশি শক্তির নামে হুমকি-ধমকি দিতে পারেন। তিনি কোনো বিদেশি শক্তির পরোয়া করেন না। কোনো পরাশক্তি, বিদেশি শক্তির পরোয়া করেন না শেখ হাসিনা। তিনি পরোয়া করেন দেশের জনগণকে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের গত ৪৪ বছরে সবচেয়ে সাহসী রাজনীতিকের নাম শেখ হাসিনা, সবচেয়ে বিচক্ষণ নেতার নাম শেখ হাসিনা, সবচেয়ে দক্ষ প্রশাসকের নাম শেখ হাসিনা, সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতার নাম শেখ হাসিনা, সবচেয়ে সফল কূটনীতিকের নাম শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর থেকে যে পরিবর্তন হয়েছে, সেই পরিবর্তনের রূপান্তরের রূপকার শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা ম্যাজিশিয়ান অব পলিটিক্স। আজ বাংলাদেশের দৃশ্যমান উন্নয়ন শেখ হাসিনার ম্যাজিক।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, অনেকে বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা বিরোধীদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন, এটা সত্যি নয়। ১১ হাজার স্বাধীনতাবিরোধী কারাগারে ছিল। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে এদের মুক্তি দিয়েছিলেন। যার মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল ৭১৩ জন। এদের মুক্তি দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালের পর জিয়াউর রহমান নাস্তা খেতে খেতে আমাদের বিভিন্ন সামরিক বাহিনীর ১১শ’ নেতাকর্মীকে ফাঁসি দিয়েছিলেন। এই ইতিহাস ভুলে গেছেন? কথায় কথায় আজ বলেন, কারাগার। আমি কি মিথ্যা বলেছি?
জিয়াউর রহমান কী করেছিলেন এর প্রমাণ আছে। গত ২৮শে অক্টোবর বিএনপি নেতারা পালিয়ে গিয়ে এখন বেসামাল হয়ে প্রতিনিয়ত আওয়ামী লীগকে আক্রমণ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি তাদের বলতে চাই, মুক্তির কথা বলেন, লজ্জা করে না? জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য দলের ৬২ হাজার নেতাকে জেলে রেখেছিলেন। আপনাদের কতজন নেতা জেলে আছেন? ৩ হাজার আমাদের নেতাকর্মীর ও সরকারি অফিসারদের গুম করেছিলেন জিয়াউর রহমান।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেখে-শুনে বলছি নিজেদের শত্রু নিজেরা না হই। আপন ঘরে যাদের শত্রু, তাদের বাইরের শত্রুর দরকার হয় না। আজ শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে শিক্ষা নিতে হবে। তার সততা, সাহস থেকে। সাহস আর সততায় শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর মতোই হয়েছেন।
তিনি বলেন, আমাদের শেখ হাসিনার নির্দেশ মেনে চলতে হবে। তার নির্দেশনার বাইরে যেন না যাই, অপকর্ম না করি, সতর্ক হয়ে যান। তিনি চুপচাপ আছেন বলে শাস্তি পাবেন না, তা নয়। শাস্তি ভোগ করতে হবে। যারা শাস্তি পেয়েছেন, তারা বুঝবেন। আর যারা পাননি, তারা স্মরণ করবেন।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, শহীদ আলতাফ মাহমুদের কন্যা শাওন মাহমুদ, শহীদ বুদ্ধিজীবী আলীম চৌধুরীর কন্যা ডা. নুজহাত চৌধুরী, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বেনজির আহমেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী এবং ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান প্রমুখ।
আপনার মতামত জানানঃ