‘মহিলাদের হিজাবে রাখে যারা, তারাই হয়তো আমার ভিডিও দেখে’,তালিবানদের সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন আফগান পর্ন তারকা।
পাশাপাশি তালিবানরা মহিলাদের ধর্ষণ করলেও, সেটা নাকি কোনও অপরাধ নয়৷ এদিকে মহিলাদের পোশাক কেমন হবে, সেটা ওরা ঠিক করে দেবে৷ এমনটাই জানান ইয়াসমিন৷
ইসলামি শাসনব্যবস্থায় আস্থাশীল তালিবান গোষ্ঠীকে একহাত নিয়েছেন আফগানিস্তানে জন্ম নেয়া এক পর্ন তারকা। নাম তার ইয়াসমিন আলি। অবশ্য তিনি এখন আর ধর্মের বেড়াজালে আবদ্ধ নন দাবি করে বলেন, ‘আমি ঈশ্বরে অবিশ্বাসী।’
আফগান এই পর্ন তারকা জানিয়েছেন, তালিবানরা আসলে মেয়েদের নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। কারণ তারা ভয় পায়, মেয়েরা যদি শরীর প্রদর্শন করে তবে তারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।
মেয়েদের বোরকা বা হিজাবের আড়ালে রাখতেই তারা পছন্দ করেন৷ বিশ্বাস করেন, মহিলাদের ভোগ করার ক্ষমতা শুধু তাদেরই রয়েছে।
তালিবানদের বাদে অন্য কোনও পুরুষের কাছে আফগান মহিলারা যেতে পারবেন না৷ নিজেদের মুখ দেখাতে পারবেন না। মহিলারা রাস্তায় বেরোলে সারা শরীরই যেন তাদের ঢাকা থাকে৷ এই হল তালিবানি ফতোয়া৷
তাদের আমলে এভাবেই বছরের পর বছর অত্যাচার সহ্য করে আসছেন আফগান মহিলারা৷ সেই দেশেরই এক ‘পর্ন স্টার’, ইয়াসমিন আলি জানিয়েছেন নিজের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা৷
খুব কম আফগান মহিলারাই যা এতদিনে বলে উঠতে পেরেছেন৷ মৃত্যুকে ভয় না পেয়ে তালিবানদের সত্যিটা সবার সামনে তুলে ধরেছেন ইয়াসমিন৷
জানিয়েছেন, তিনিই আফগানিস্তানের প্রথম ও একমাত্র পর্ন ছবির তারকা৷ তার আগে বা পরে কেউই এই কাজ করে ওঠার সাহস দেখাতে পারেননি৷ কারণ এর পরিণতি সে দেশে ভয়ঙ্কর।
ওনলি ফ্যানস এবং পর্ন হাবে ইয়াসমিনের ‘হট’ ভিডিও বা ছবি প্রায়শই দেখা যায়। পর্ন দুনিয়ায় অত্যন্ত পরিচিত নাম তিনি। সেই মহিলাই আদতে আফগানিস্তানের নাগরিক৷
তবে বর্তমানে তার ঠিকানা ব্রিটেন৷ সে কারণেই সুখে নিজের মতো করে জীবন-যাপন করতে পারছেন৷ না হলে এতদিন তালিবরা হয়তো তাকে খুনই করে ফেলত বলে জানিয়েছেন ইয়াসমিন৷
ইয়াসমিন জানান, তালিবান শাসনের প্রথম দফায় তিনি কাবুলেই ছিলেন। সে সময় তালিবানি ‘হিংসা’ সামনে থেকে দেখেছেন।
তার দাবি, মেয়েদের ‘বস্তু’ মনে করে তালিবান। এ কথা তিনি বরাবরই জেনে এসেছেন। আফগানিস্তানে তালিবানের প্রথম দফার শাসনে স্বচক্ষে দেখেছেনও। তখন তার মা তাকে বলতেন, আফগানিস্তানে ‘ধর্ষণ’ বলে কোনো কথা নেই। তালিবান চাইলে যে কোনো মেয়ের সঙ্গে যা খুশি করতে পারে।
আফগান পুরুষদেরও তালিবানি হিংসার শিকার হতে দেখেছেন ইয়াসমিন। তিনি বলেন, নানা কারণে, এমনকি ধর্মীয় পোশাক যথাযথভাবে পরিধান না করলেও তাদের জনসমক্ষে নৃশংসভাবে মারতে দেখেছেন।
নব্বইয়ের দশকে আফগানিস্তানে যখন এসব চলছে, তখন প্রাণ বাঁচাতে মায়ের সঙ্গে ব্রিটেনে চলে আসন ইয়াসমিন। এরপর ব্রিটেনেই নিজের শিক্ষা সম্পূর্ণ করেছেন তিনি।
তিনি জানান, আফগানিস্তানে মেয়েদের শরীরের কোনও অংশই দেখানো ঘোরতর অপরাধ। এমনটাই মনে করে তালিবানরা৷
ইয়াসমিন বলেন, ওরা মনে করে আমার শরীরের ওপর কর্তৃত্ব রয়েছে শুধু ওদের। আর আমি যদি সর্বসমক্ষে সেই শরীর প্রদর্শন করি তবে আমি প্রকৃত আফগান নয়। আমার দেশপ্রেমে ঘাটতি আছে।
তবে তাতে কিছু যায় আসে না ইয়াসমিনের। তার কথায়, আমি আফগান তো কী হয়েছে! তালিবান আমার দেশপ্রেম কতটা, তা ঠিক করে দেবে? কে বলতে পারে, ওরাও হয়তো আমার ফিল্ম দেখে। কিন্তু প্রকাশ্যে বলতে পারে না।
পেশা হিসেবে পর্ন দুনিয়াকে বেছে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিজের জানিয়ে ইয়াসমিন বলেন, আমি ধর্মকে অনেক দিন আগেই বিদায় জানিয়েছিলাম। পেশার প্রয়োজনে শরীর প্রদর্শনের সিদ্ধান্তও আমার।
তিনি বলেন, তালিবান তার সরাসরি কোনো ক্ষতি করতে না পারলেও হুমকি দেয়। মাঝে মধ্যেই তার কাছে ই-মেইল আসে। তাকে ইহুদি এবং গুপ্তচর বলে আক্রমণ করা হয় সেখানে।
ইয়াসমিন জানান, তালিবানের অদ্ভুত মানসিকতা দেখে তার হাসি পায়। যে মহিলাদের ছাড়া মানব জগৎ চলবে না, তাদেরই এভাবে দাবিয়ে রাখতে চায় তালিবান।
তিনি জানান, আফগানিস্তানে এখনো ঋতুচক্রে থাকা নারীকে অপবিত্র বলে গণ্য করা হয়।
তালিবানরা মহিলাদের ধর্ষণ করলেও, সেটা নাকি কোনও অপরাধ নয়৷ এদিকে মহিলাদের পোশাক কেমন হবে, সেটা ওরা ঠিক করে দেবে৷ এমনটাই জানান ইয়াসমিন৷
তার মতে, তালিবানদের কাছে ‘ধর্ষণ’ বলে কোনও কথা নেই। ওরা চাইলে যে কোনও মেয়ের সঙ্গে যা খুশি করতে পারে।
এসডব্লিউ/এসএস/১৮১২
আপনার মতামত জানানঃ