গতকাল শনিবার (২ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে নগরীর বটতলা এলাকায় অবস্থিত জেলা পরিষদের মার্কেটের পেছনে ‘দৈনিক দখিনের সময়’ পত্রিকা কার্যালয়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
পত্রিকাটির সম্পাদক আলম রায়হানসহ তিনজনকে কুপিয়ে আহত করেছে সন্ত্রাসীরা। আহত আলম রায়হানকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দৈনিক দখিনের সময়ের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্টার হাফিজ উদ্দিন ও সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ প্রতিনিধি মশিউর রহমান।
জমিসংক্রান্ত পূর্ববিরোধের জের ধরে এ হামালার ঘটনা ঘটতে পারে বলে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, ওই এলাকার বাসিন্দা তৌহিদ, উজ্জ্বল, সিদ্দিকসহ অন্তত ১০ জন অতর্কিতভাবে দখিনের সময়ের অফিসে গিয়ে হামলা করে। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের উপর চড়াও হন তারা। তাদের হামলায় দখিনের সময়ের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্টার হাফিজ ও সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ প্রতিনিধি মশিউরও আহত হন।
আহত মশিউর রহমান বলেন, ‘অফিসের সামনের জায়গাটায় পানি জমলে সেখানে বালু ফেলছিলেন দুই শ্রমিক। এ সময় তৌহিদ, উজ্জ্বল, সিদ্দিকসহ ১০-১২ জন লোক এসে শ্রমিকদের মারধর করে একটি ডোবায় ফেলে দেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দৈনিক দখিনের সময় পত্রিকার সম্পাদক আলম রায়হান তাদের উদ্ধার করতে গেলে তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে সন্ত্রাসীরা পত্রিকা অফিসে ঢুকে সাংবাদিক হাফিজ ও আমাকে মারধর করেন। গুরুতর অবস্থায় আলম রায়হানকে উদ্ধার করে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
হামলার দায়ে অভিযুক্ত সিদ্দিক জানান, ঘটনার সময় আমি বরিশালেই ছিলাম না। তার পরও আমার নাম কেন বলা হচ্ছে বুঝতে পারছি না। তৌহিদের সঙ্গে আলম রায়হানের জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। এই বিরোধের জেরে আদালতে একটি মামলাও বিচারাধীন। কিছু দিন আগে আরও একবার এই দুপক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। তখন পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
যতদূর শুনেছি, শনিবার রাতে বাড়ির সীমানায় তৌহিদের দেওয়া সীমানা বেড়া লোকজন নিয়ে ভাঙতে গিয়েছিলেন আলম রায়হান। তৌহিদ ও তার পরিবারের সদস্যরা বাধা দিলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে দুপক্ষের লোকজনই আহত হয়েছেন।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে হামলাকারীদের সঙ্গে সাংবাদিক আলম রায়হানের জমিসংক্রান্ত বিরোধ চলছে। আলম রায়হানের ওপর হামলা করে হামলাকারীরা তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে পুলিশে খবর দেন।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পাই অভিযোগকারীরাই সাংবাদিক আলম রায়হান ও তার অফিসে হামলা করেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। পাশাপাশি হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
১৯৮১ সালে সাপ্তাহিক সুগন্ধায় চিফ রিপোর্টার জনপ্রিয় ‘গেদুচাচার খোলা চিঠি’র লেখক আলম রায়হান সাপ্তাহিক সুগন্ধা, সুগন্ধা কাগজ, আমাদের সময়, আমাদের অর্থনীতি, দৈনিক যায়যায় দিন এবং বাংলা ভিশন ও মাই টিভিতে কাজ করেছেন। বর্তমানে তার সম্পাদনায় বরিশাল থেকে ‘দৈনিক দখিনের সময়’ নামের একটি স্থানীয় দৈনিক নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে।
এসডব্লিউ/এসএস/১৪৩২
আপনার মতামত জানানঃ