ইরাকের পার্লামেন্ট ভবনের নিরাপত্তা অগ্রাহ্য করে ভবনের ভেতরে প্রবেশ করেছে শত শত বিক্ষোভকারী। বিক্ষোভকারীরা গত অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে বেশি ভোট পাওয়া মোকতাদা আল-সদরের অনুসারী।
বিবিসি জানায়, গতকাল বুধবার (২৭জুলাই) বাগদাদের গ্রিন জোন হিসেবে পরিচিত এলাকায় প্রবেশ করে বিক্ষোভকারীরা। ওই এলাকায় বিভিন্ন দূতাবাসের অফিসসহ পার্লামেন্ট ভবনের পাশাপাশি বহু সরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
ডয়েচেভেলে জানায়, মোকতাদা আল-সদর হলেন শিয়া ধর্মীয় নেতা। তার হাজার হাজার সমর্থক পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়েছেন। তাদের প্রধান আপত্তি হলো মোহাম্মেদ আল-সুদানীকে প্রধানমন্ত্রী করা নিয়ে। তবে বিক্ষোভকারীরা যখন পার্লামেন্টে ঢুকে বিক্ষোভ দেখান, তখন সেখানে কোনো পার্লামেন্ট সদস্য ছিলেন না।
বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিতে থাকেন, ‘সুদানী আউট’। কিছু বিক্ষোভকারী পাঁচিলে উঠে পড়েন। কিছু বিক্ষোভকারী পার্লামেন্ট ভবনের ভিতরে ঢুকে চেয়ার-টেবিলে বসে পড়েন।
বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিতে থাকেন, ‘সুদানী আউট’। কিছু বিক্ষোভকারী পাঁচিলে উঠে পড়েন। কিছু বিক্ষোভকারী পার্লামেন্ট ভবনের ভিতরে ঢুকে চেয়ার-টেবিলে বসে পড়েন।
কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল-কাধিমি বিক্ষোভকারীদের অবিলম্বে পার্লামেন্ট ভবন খালি করে দিতে বলেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও বিদেশি দূতাবাসের কোনো ক্ষতি হতে দেবে না।
বিক্ষোভকারীরা বাগদাদের গ্রিন জোনের নিরাপত্তা বলয় ভেদ করতে সক্ষম হয়। যেখানে বিভিন্ন দূতাবাস ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের কার্যালয় অবস্থিত।
একটি নিরাপত্তা সূত্র এএফপিকে জানায়, নিরাপত্তা বাহিনী প্রথমে অনুপ্রবেশকারীদের থামিয়েছিল বলে মনে হয়েছিল, কিন্তু তারপরে তারা ‘পার্লামেন্টে হামলা চালায়’।
ইরাকের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মোস্তাফা আল-কাদিমি বিক্ষোভকারীদের পার্লামেন্ট ভবন ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। যদিও তারা সেখানে গান গাইছেন, নাচছেন এবং টেবিলে শুয়ে আছেন।
ইরাকের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে চরম বিরোধ বিরাজ করছে। এ কারণে দেশটিতে নয় মাসেও একটি নতুন সরকার গঠন করা যায়নি। এই অচলাবস্থার ধারাবাহিকতায় এখন দেশটিতে অস্থিরতা শুরু হলো।
নয় মাস ধরে চলা অচলাবস্থার পর রাজনৈতিক অস্থিতার মধ্যে পড়ল দেশটি। শিয়া ধর্মগুরু আল-সদর, যিনি ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের তীব্র বিরোধীদের একজন। তিনি গত অক্টোবরে হওয়া নির্বাচনে তার জোটের জয় দাবি করেন। যখন দেখা গেল তার জোট সরকার গঠনে সক্ষম নন তখন তিনি বিরোধীদের সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানান।
পরে তিনি ও তার সমর্থকরা প্রধানমন্ত্রী পদে মুহাম্মেদ আল-সুদানির বিরোধীতা করেন। কেননা, তাদের ধারণা, তিনি ইরান ঘনিষ্ঠ।
বুধবারের ঘটনা বহু সংকট পার করে আসা তেল সমৃদ্ধ ইরাকের জন্য একটি সতর্কবার্তা। এর আগে দুর্নীতি ও বেকারত্ব কারণে ২০১৯ সালেও দেশটিতে হয়েছে তীব্র বিক্ষোভ।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৩১৮
আপনার মতামত জানানঃ