ধর্ষণের শিকার জীবিত বা মৃত নারীর সব ধরনের ছবি ও পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, ধর্ষণের শিকার নারীর ছবি ও পরিচয় প্রকাশ বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এই মর্মে রুল জারি করেছেন আদালত।
সোমবার (০৮ মার্চ) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এর আগে গণমাধ্যমে ধর্ষণের শিকার শিশুদের নাম, পরিচয় ও ছবি প্রকাশ বন্ধে নির্দেশনা দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এছাড়া ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার নারীর ছবি ও পরিচয় প্রকাশ বন্ধে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা ৩০ দিনের মধ্যে তথ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান এবং প্রেস কাউন্সিলকে এফিডেভিটের মাধ্যমে জানাতে বলা হয়েছে।
সোমবার আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস। পরে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ধর্ষণের শিকার জীবিত বা মৃত নারীর সব ধরনের ছবি ও পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার জীবিত বা মৃত নারীর ছবি ও পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা বিধানের বাস্তবায়ন চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। একইসঙ্গে রিটে এ ধরনের ছবি প্রকাশে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। জাস্টিস ওয়াচ ফাউন্ডেশনের পক্ষে ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন এ রিট দায়ের করেন। রিটে আইন মন্ত্রণালয় সচিব, তথ্য মন্ত্রণালয় সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন বলেন, ধর্ষণের শিকার কোনও নারীর ছবি প্রকাশে আইনি বাধা থাকলেও হরহামেশাই গণমাধ্যমে ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর ছবি প্রকাশ করা হচ্ছে। এতে তাদের পরিবারের সদস্যরা সামাজিকভাবে হেয় হচ্ছেন। বিশেষ করে সম্প্রতি ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা যাওয়া ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের এক শিক্ষার্থীর ছবি দেশের অধিকাংশ গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। এ ছবি প্রকাশের ঘটনা আমাদের ব্যথিত করেছে। তাই ভিকটিমদের ছবি-পরিচয় প্রকাশ বন্ধে রিট দায়ের করেছিলাম।
সে রিটের পর হাইকোর্ট আইনের সংস্পর্শে আসা কোনও শিশুর ছবি বা পরিচয় প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। একইসঙ্গে সব গণমাধ্যমকে ভবিষ্যতে আইনের সংস্পর্শে আসা কোনও শিশুর ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দেন।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/২১১৩
আপনার মতামত জানানঃ