ক্রমাগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। বাহ্যিক প্রতিকূলতা, প্রাথমিকভাবে অভ্যন্তরীণ নীতির অপর্যাপ্ততা সম্মিলিতভাবে সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। এ কথা বলেছেন আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল আইএমএফের মিশন প্রধান রাহুল আনন্দ। আইএমএফের ওয়েবসাইটে দেয়া ১৪ই ডিসেম্বরের এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০২৩ অর্থ বছরে সার্বিক ব্যালেন্স অব পেমেন্টে আর্থিক হিসাবে অপ্রত্যাশিতভাবে ভারসাম্যে ঘাটতি দেখা দেয়। এর ফলে বৈদেশিক রিজার্ভ এবং টাকার ওপর ক্রমাগত চাপ পড়ছে। এসব হতাশাজনক পরিস্থিতিতে সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অর্থনৈতিক নীতি কঠোর করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিনিময় হার আরও নমনীয় করার অনুমতি দিয়েছে। একাধিক বিনিময় হার একীভূত করেছে।
কর্তৃপক্ষ তার কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে প্রাথমিক আর্থিক ভারসাম্য রক্ষা করেছে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক জটিল পরিবেশ সত্ত্বেও তিনি এসব উদ্যোগের জন্য কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান। রাহুল আনন্দ আরও বলেন, সার্বিক কর্মসূচির পারফর্মেন্স বেশ সন্তোষজনক।
এর প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, মুদ্রাস্ফীতি এবং বাহ্যিক স্থিতিস্থাপকতা বিনির্মাণ করা উচিত। এর জন্য প্রয়োজন আর্থিক নীতি আরও কঠোর করা, যা আর্থিক নীতির পক্ষে দৃঢ় সমর্থনে থাকতে হবে। একই সময়ে আরও নমনীয় বিনিময় হার ব্যবস্থা বৈদেশিক মুদ্রার চাপ কমাতে এবং বাহ্যিক ‘বাফার’ বিনির্মাণে সহায়তা করবে।
এর সঙ্গে প্রবৃদ্ধিকে বাড়ানোর সংস্কারের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথমত কর রাজস্ব বৃদ্ধি এবং অগ্রাধিকার নয় এমন খাতের ব্যয়কে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হবে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, এর ফলে কর্তৃপক্ষ সামাজিক উন্নয়নে বিনিয়োগ এবং জলবায়ু খাতে ব্যয় বৃদ্ধি করতে পারবে কর্তৃপক্ষ। সরকারি অর্থনৈতিক এবং বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনাকে অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি করতে হবে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং আর্থিক ঝুঁকি হ্রাসের ক্ষেত্রে।
দ্বিতীয়ত, মুদ্রানীতির কাঠামো আধুনিকায়ন করে এবং আর্থিক নীতি উন্নত করে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে উৎসাহিত করা যাবে। বিনিময় হার আধুনিকায়ন করার জন্য আরও সংস্কার করতে হবে। তাতে শক্তিশালী হবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। এর ফলে বাহ্যিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে। তৃতীয়ত ব্যাংকিং খাত নিয়ন্ত্রণ শক্তিশালী করতে, নজরদারি করতে এবং সুশাসনের অধীনে আনতে এখাতের ঝুঁকিগুলোর সংস্কার কর্মকাণ্ডে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যকে সমর্থন করতে বেসরকারি আর্থিক খাতকে গতিশীল করতে হবে। রাহুল আনন্দ বলেন, আইএমএফ এক্সিকিউটিভ বোর্ড তার আইএমএফ সমর্থিক প্রোগ্রামের প্রথম রিভিউ এবং আর্টিক্যাল ৪ নিয়ে আলোচনা শেষ করেছে ১২ই ডিসেম্বর। এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি হিসেবে দ্বিতীয় কিস্তির প্রায় ৪৬ কোটি ৮৩ লাখ ডলার ছাড় দেয়ার অনুমোদন দিয়েছে বোর্ড। সব মিলে এখন পর্যন্ত ছাড় দেয়া অর্থের পরিমাণ দাঁড়াবে ৯৩ কোটি ৬৬ লাখ ডলার।
আপনার মতামত জানানঃ