পাকিস্তানের একজন শীর্ষ বিচারক গোয়েন্দা প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে। পিটিআই প্রধানের ওপর আরেকবার হত্যাচেষ্টার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আলজাজিরা জানিয়েছে, ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আমির ফারুক এ শঙ্কার কথা জানিয়েছেন। গতকাল স্থানীয় সময় শুক্রবার ব্যবসায়ীদের করা একটি আপিলের শুনানির সময় গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বরাতে এসব কথা বলেছেন তিনি।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইমরান খান ইসলামাবাদে লংমার্চে যোগ দিলে তার ওপর হামলার আশঙ্কা রয়েছে।
আজ শুক্রবার ব্যবসায়ীদের করা একটি আপিলের শুনানির সময় গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বরাতে এমনটা বলেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। খবর আল–জাজিরা।
ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, ‘এটি উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক যে, নভেম্বরের ৩ তারিখ পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদে দলীয় লং মার্চ নিয়ে যাওয়ার সময় পিটিআইপ্রধান বন্দুকের গুলিতে আহত হন। এ ঘটনায় মোয়াজ্জেম নওয়াজ নামের একজন পিটিআই সমর্থক নিহত হন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ ১৪ জন আহত হন।’
উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুর দিকে পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খানের ওপর হামলা হয়। আগাম নির্বাচনের দাবিতে সেদিন তিনি দেশটির ওয়াজিরাবাদ শহরে লংমার্চ করছিলেন। হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাকে।
শুনানির শুরুতে বিচারপতি পিটিআইকে রাজধানীতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার অনুমতি চেয়ে ইসলামাবাদ প্রশাসনের কাছে নতুন করে অনুমতি চাওয়ার নির্দেশনা দেন।
প্রধান বিচারক ওমর আমির ফারুক আরো বলেন, ডি-চকে অনুমতি দেবেন, নাকি এফনাইন পার্কে অনুমতি দেবেন—সেটা প্রশাসন নির্ধারণ করবে।
হামলায় পিটিআইয়ের এক সমর্থক নিহত হন। দলটির কয়েকজন নেতা–কর্মীও আহত হন। এর পরপরই লংমার্চ স্থগিত করা হয়। পরে ইমরান অভিযোগ করেন, হামলায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা জেনারেল ফয়সাল নাসির জড়িত।
তবে নিজের অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ হাজির করেননি ইমরান খান। পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনীও ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। হামলার সময় ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
ইসলামাবাদে পিটিআইয়ের বিক্ষোভের সময় রাস্তা অবরোধ নিয়ে ব্যবসায়ীদের করা একটি আপিলের ওপর আজ আদালতে শুনানি চলছিল। এ সময় সেখানে একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন পেশ করে পুলিশ। এ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইমরান আবার লংমার্চে অংশ নিলে তাঁর ওপর আরেকটি হামলা হতে পারে।
এমন পরিস্থিতি ঠেকাতে ইসলামাবাদে সভা–সমাবেশের জন্য পিটিআইকে নতুন করে আবেদন করতে বলেছেন বিচারপতি আমির ফারুক। একই সঙ্গে লংমার্চে অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এদিকে হামলার পর ১০ নভেম্বর আবারও লংমার্চ শুরু হয়েছে। তবে সরাসরি অংশ নিতে পারেননি ইমরান। বর্তমানে তিনি লাহোরে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। সেখান থেকেই সমর্থকদের উদ্দেশে ভার্চ্যুয়ালি ভাষণ দিচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি সপ্তাহেই লংমার্চে সশরীর উপস্থিত থাকবেন ইমরান।
গত এপ্রিলে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে এক অনাস্থা ভোটের মধ্য দিয়ে পতন হয় ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের। এরপর থেকেই তিনি আগাম নির্বাচনের দাবিতে দেশজুড়ে সভা–সমাবেশ করছেন। আগামী বছর পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
এসডব্লিউএসএস/১২২৫
আপনার মতামত জানানঃ