পাবনা শহরের পৌর এলাকার শালগাড়িয়া থেকে অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ অবৈধ যৌন উত্তেজক সিরাপসহ দুই যুবলীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছোট শালগাড়ীয়া এলাকার মৃত আকু শেখের ছেলে আজমল (৩৫) ও মৃত আফজাল হোসেনের ছেলে রাজ আহমেদ রনি (৪০)।
বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান।
পাবনা পুলিশ সুপার মুহিবুল ইসলাম খান জানান, বুধবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলমের নেতৃত্বে গোয়েন্দা পুলিশ ছোট শালগাড়ীয়া এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় আজমলকে আটকের পর তল্লাশী করে, তার কোমরে লুকিয়ে রাখা একটি লাইসেন্সবিহীন বিদেশী পিস্তল, ম্যাগজিন ও সাত রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। আজমলের বিরুদ্ধে পাবনা সদর থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, আজমল চিহ্নিত সন্ত্রাসী, তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্রসহ চারটি মামলা রয়েছে।
এদিকে বুধবার রাতেই ছোট শালগাড়ীয়া এলাকায় জনৈক তালেবের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বাড়ির ভাড়াটিয়া রাজ আহমেদ রনির কারখানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ যৌন উত্তেজক সিরাপ, মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ ও ৫ বোতল স্পিরিটসহ রনিকে আটক করে। তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মুহিবুল ইসলাম খান আরো বলেন, পাবনায় অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে পুলিশ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। কারো ব্যক্তি পরিচয় পুলিশের দেখার বিষয় নয়। অপরাধী হলে তাকে আইনের আওতায় আসতেই হবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মাসুদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রোকনুজ্জামান, ওসি (ডিবি) আব্দুল হান্নান, ডিবি পুলিশ পরিদর্শক জিন্নাত সরকার প্রমুখ।
তবে, কোনো অপরাধীর ব্যক্তিগত অপরাধের দায় যুবলীগ নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন জেলা যুবলীগের আহবায়ক আলী মর্তুজা বিশ্বাস সনি। তিনি বলেন, আটক হওয়া ব্যক্তিদের বিষয়ে জেনেছি। বিষয়টি কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতৃবৃন্দকে জানানো হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আওয়ামী লীগ যুবলীগ নেতাকর্মীদের দৌরাত্ম্য দিনদিন চাউর হয়ে উঠছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে ক্ষমতার চূড়ান্তে বসবাস করেন। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ও সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আগ্রহবোধ না করায় তাদের দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে চলেছে।
তারা বলছেন, দলীয় প্রভাব খাটিয়ে আওয়ামী লীগ যুবলীগ নেতারা চাঁদাবাজিসহ বহু অপকর্মই করে থাকেন, যার বিরুদ্ধে স্থানীয় ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করতেও ভয় পান। স্থানীয় পদপ্রাপ্ত প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে থানা প্রশাসনও এক প্রকার নমনীয় থাকেন। সেটা হোক ভয় অথবা কোনো বিনিময় মাধ্যমে। খুব ঠেকায় না পড়লে স্থানীয় প্রশাসন মামলা নেন না। ফলে স্থানীয় নেতারাও লিপ্ত থাকেন লাগাম ছাড়া অপরাধকর্মে। এক্ষেত্রে প্রশাসনের দায়িত্বে অবহেলা বা অনিয়মসহ স্থানীয় নেতাদের ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন সংশ্লিষ্টরা।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/২০১৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ