যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মায়ামিতে গত বৃহস্পতিবার ধসে পড়া একটি ১২তলা ভবনে নিখোঁজ ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫৯ জনে। শুক্রবার রাতভর উদ্ধার অভিযান চালিয়ে আরও তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করার পর এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চার জনে। তবে দমকলবাহিনী ও উদ্ধারকারী দল এখনও লোকজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধারের আশা করছেন।
ভবনটি ধসে পড়ায় ওই কমপ্লেক্সের ১৩০টি ইউনিটের অর্ধেক তছনছ হয়ে গেছে। তবে ভবন ধসের কারণ এখনও জানা যায়নি। সার্ফসাইড শহরে এই ভবনটি নির্মাণ হয়েছিল ১৯৮০ সালে।
ভবন ধসের মুহূর্তে বহুতল ওই ভবনটিতে আসলেও কতো মানুষের বসবাস ছিল সেটি পরিষ্কার নয়। তবে মায়ামি ডাডের মেয়র ড্যানিয়েল লেভিন কাভা জানিয়েছিলেন, ভবনটিতে যারা অবস্থান করছিলেন সেই সংখ্যা তাদের হিসাব মতে ১০২ জন।
উদ্ধারকারীরা ৩৫ জনকে ধ্বংসস্তূপ থেকে টেনে তুলেছে বলে, কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। দশজনকে পর্যবেক্ষণ ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উদ্ধারকারী ও তল্লাশি দলগুলো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া একটি পার্কিং গ্যারেজ থেকে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কারণ তারা ধ্বংসাবশেষের নিচে বেঁচে থাকা মানুষের সন্ধান পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিসান্টিস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, এরকম বিশাল ভবন ধসে যাওয়া সত্যিই বেদনাদায়ক। এখনও তল্লাশি ও উদ্ধার তৎপরতা চলছে।
জানা যায়, ভেঙে পড়া ভবন থেকে কয়েক ব্লক দূরে একটি কমিউনিটি সেন্টারে নিখোঁজদের স্বজনরা জড়ো হয়ে অপেক্ষা করছেন, তাদের প্রিয়জনের অবস্থা জানার জন্য। তবে তাদের কাছে সবচেয়ে খারাপ খবর আসার আশঙ্কাই বেশি।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি ফ্লোরিডার জনগণকে বলছি, কেন্দ্রীয় সরকার দিতে পারে এমন সব সহায়তা আপনারা চাইতে পারেন, আমরা অপেক্ষা করছি, কেবল আমাদের জানান। আমরা সেখানে থাকব।’
যারা নিখোঁজ হয়েছেন, তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ল্যাটিন আমেরিকান অভিবাসী রয়েছেন। এছাড়া প্যারাগুয়ের ফার্স্ট লেডির এক স্বজনও নিখোঁজদের মধ্যে রয়েছেন বলে, প্যারাগুয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ভবনটি ধসে পড়ার শব্দ শুনতে পাওয়া স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, আমি একটা গমগম শব্দ শুনেছিলাম এবং ভেবেছিলাম হয়তো কোন মোটরসাইকেলের শব্দ। ঘুরে তাকাতেই দেখলাম একটা ধুলোর কুণ্ডলি আমাদের দিকে আসছে। আমাদের একটা কথাই মনে হচ্ছিল যে এসব ‘কি হচ্ছে? আমরা আমাদের শার্ট দিয়ে মুখ ঢেকে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই এবং নিরাপত্তা কর্মীকে দেখে বলি যে ‘কী হয়েছে?’ এবং তিনি বলেন যে ভবনটি ধসে গেছে।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/২০২০
আপনার মতামত জানানঃ