জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, সহিংসতা অগ্রহণযোগ্য এবং সহিংসতায় উস্কানি দিতে পারে এমন কোনো বক্তব্য বা কর্মকাণ্ড এড়িয়ে চলুন।
মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় বলেছে, ‘দেশ যখন নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে, তখন আমরা সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি- এ ধরনের সহিংসতা অগ্রহণযোগ্য এবং সহিংসতায় উসকানি দিতে পারে এমন কোনো বক্তব্য বা কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই।’ মঙ্গলবার কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতি এসব কথা বলা হয়েছে।
বাংলাদেশে চলমান বিক্ষোভ চলাকালীন একাধিক সহিংস ঘটনায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন উল্লেখ করে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় থেকে বলা হয়, চলমান এই সহিংসতায় বেশ কয়েকজন মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে পুলিশ সদস্য, পথচারী ও বিরোধী দলের কর্মীরা রয়েছেন।
গত ২৮ অক্টোবর বিরোধী দলের বিক্ষোভকারীরা প্রধান বিচারপতিসহ অন্য কয়েকজন বিচারকদের বাসভবনে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ৩০ জন সাংবাদিক বিক্ষোভকারী ও মোটরসাইকেলে চড়ে আসা মুখোশধারী ব্যক্তিদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এই হামলাকারীরা ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক ছিলেন।
এদিকে জানা গেছে, বিরোধী দলের বিক্ষোভের জবাবে পুলিশ রড, লাঠিসোটা, রাবার বুলেট এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিয়ে পাল্টা হামলা করেছে। তারা সারাদেশে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বাড়িতেও অভিযান চালিয়েছে এবং নির্বিচারে নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যসহ শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার ও আটক করেছে।
পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয় বলেছে, পুলিশ যেন খুব প্রয়োজন হলে তবেই বলপ্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়।
এমন সিদ্ধান্তের পেছনে বৈধতা ও সতর্কতা থাকা জরুরি বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, গত ৩০ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির বাসভবনে কথিত অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিরোধীদলীয় নেতা এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেফতার করে ‘বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে’ অভিযুক্ত করা হয়।
তিনি এখনো বন্দী রয়েছেন। গ্রেফতারের ভয়ে আরো বেশ কয়েকজন সিনিয়র বিরোধী নেতা আত্মগোপনে চলে গেছেন বলে জানা গেছে। এমন অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয় বলেছে, সরকারকে অবশ্যই এই সঙ্কটময় সময়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা রোধে সর্বোচ্চ সংযম অবলম্বন করতে হবে এবং নির্বাচনের আগে, চলাকালীন এবং পরে সকল বাংলাদেশীদের জন্য মানবাধিকার সম্পূর্ণভাবে সমুন্নত রাখতে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
আপনার মতামত জানানঃ