ব্রিটেনে মিলল করোনার নতুন রূপ ডেল্টাক্রন। ফের নতুন করোনা-ভেরিয়েন্ট। ফের চিন্তায় বিশেষজ্ঞেরা। ডেল্টাক্রনের আবির্ভাব নিয়ে মুখ খুললেও নতুন এই ভেরিয়েন্টটি ঠিক কতটা বিপজ্জনক, সে নিয়ে কিছু জানায়নি এইচএসএ।
সূত্র মতে, হাইব্রিড ভেরিয়েন্ট এটি। অর্থাৎ দু’টি ভেরিয়েন্টের মিশ্রণে তৈরি। করোনাভাইরাসের ডেল্টা স্ট্রেন ও ওমিক্রন স্ট্রেন, দু’য়েরই চরিত্র রয়েছে এতে।
ব্রিটেনের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংস্থা (এইচএসএ) জানিয়েছে, দেশের একটি গবেষণাগারে নমুনা পরীক্ষা করতে গিয়ে ধরা পড়েছে এটি। মিউট্যান্ট হাইব্রিডটিকে নজরে রাখার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
ডেল্টাক্রনের আবির্ভাব নিয়ে মুখ খুললেও নতুন এই ভেরিয়েন্টটি ঠিক কতটা বিপজ্জনক, সে নিয়ে কিছু জানায়নি এইচএসএ। অর্থাৎ, এর সংক্রমণ ক্ষমতা কতটা, মারণ ক্ষমতাই বা কেমন, তা নিয়ে মুখ খোলেনি তারা।
এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটিয়েছে ডেল্টা স্ট্রেন। এর প্রভাবে দ্বিতীয় ঢেউ আসে। আমেরিকা ও ভারতে ব্যাপক মৃত্যু হয়। উল্টো দিকে, ওমিক্রন সবচেয়ে বেশি সংক্রামক স্ট্রেন। এটি ডেকে এনেছে তৃতীয় ঢেউ। এটি সংক্রমণ ক্ষমতা ভয়াবহ হলেও মৃত্যুসঙ্কট কম ছিল।
এদের দু’য়ের মিশ্রণে তৈরি হওয়া ভেরিয়েন্ট তাই কপালে ভাঁজ ফেলেছে বিজ্ঞানীদের। একটাই আশা দেখছেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা, তা হল ডেল্টাক্রন মিললেও দৈনিক সংক্রমণ ক্রমশ কমছে ব্রিটেনে।
ডেল্টাক্রন ভেরিয়েন্ট প্রথম আবিষ্কার হয় সাইপ্রাসে, গত বছরের শেষের দিকে। ‘ইউনিভার্সিটি অব সাইপ্রাস’-এর গবেষক লিয়োনিডস কসট্রিকিস দাবি করেছিলেন, তার দল ২৫টি ডেল্টাক্রন সংক্রমণ চিহ্নিত করেছে। এ বছর ৭ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক তথ্যভান্ডার ‘জিআইএসএআইডি’-র কাছে সেই ২৫টি সংক্রমণের জেনেটিক সিকোয়েন্স পাঠান কসট্রিকিসরা।
কসট্রিকিস সে সময়ে জানিয়েছিলেন, হাইব্রিড ভেরিয়েন্টটিতে রয়েছে ডেল্টার জিনোম ও ওমিক্রনের জেনেটিক চিহ্ন। যদিও বহু গবেষণা সংস্থা কসট্রিকিসের দাবিকে খারিজ করে দেয়।
অনেকে বলেন, ‘‘ল্যাব এরর।’’ অর্থাৎ গবেষণাগারে কোনও ভুল হয়েছে। এ-ও সন্দেহ প্রকাশ করা হয়, হয়তো দু’টি ভেরিয়েন্টের নমুনা কোনও ভাবে গবেষণাগারে মিশে গিয়ে এই ফলাফল এসেছে। ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের বার্কলে ল্যাবরেটরির গবেষক টমাস পিকক টুইট করেছিলেন, ‘‘স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, এটি কোনও ভাবে মিশে গিয়েছে।’’
কিন্ত কসট্রিকিস নিজের দাবিতে অনড় ছিলেন। তার আরও দাবি ছিল, ডেল্টা ও ওমিক্রনের থেকেও বেশি শক্তিশালী ডেল্টাক্রন। ব্রিটেনের এইচএসএ অবশ্য এখনও ডেল্টাক্রন সম্পর্কে বিশদে কিছু জানায়নি।
গত নভেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ায় ওমিক্রনের নতুন ধরন শনাক্ত হয়। তারপর তা দ্রুত পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও ওমিক্রন ডেল্টা ধরনের মতো তীব্র না।
এদিকে, করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ সময় শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ কোটি ১৬ লাখ ৫ হাজার ৬২৮ জন এবং মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৮ লাখ ৮১ হাজার ১২৮ জনে। আর সুস্থ হয়েছেন ৩৪ কোটি ৩৯ লাখ ৩৮ হাজার ৮২১ জন।
এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু হয়েছে বিশ্বের শীর্ষ ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রে। তালিকায় শীর্ষে থাকা দেশটিতে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৯৯ লাখ ১৫ হাজার ৭৩৪ জন। এ ছাড়া মোট মৃত্যু হয়েছে ৯ লাখ ৫৫ হাজার ৪৯৭ জনের।
আক্রান্তে দ্বিতীয় এবং মৃত্যুতে তৃতীয় অবস্থানে থাকা ভারতে এখন পর্যন্ত করোনায় ৪ কোটি ২৭ লাখ ৭৯ হাজার ২২ জন সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৫ লাখ ১০ হাজার ৯৩৭ জনের।
এসডব্লিউ/এসএস/১৬৫৫
আপনার মতামত জানানঃ