আধুনিক এই বিশ্বে সন্তান জন্ম দেয়া নিয়ে বিজ্ঞান খুলে দিয়েছে নিত্য নতুন দিশা। স্বাভাবিক সঙ্গম ব্যতীত সন্তান ধারণের জন্য এসেছে টেস্টটিউব বেবি প্রচলন। সিঙ্গেল মা হতে এখন অনেকেই হাজির হচ্ছেন স্পার্ম ব্যাংকে। তবে এতো এতো উপায় এর মাঝে অদ্ভুত এক ঘটনা ঘটেছে খাঁচায় বন্দি এক মোমোর সাথে।
১২ বছর খাঁচাবন্দি মোমো একা একাই হলো অন্তঃসত্ত্বা! এরপর ডিএনএ পরীক্ষায় ফাঁস ‘সঙ্গম’ রহস্য; যা নিয়ে তোলপাড় বিজ্ঞানী মহল।
প্রসঙ্গত, জাপানের নাগাসাকির কুজুকুশিমা চিড়িয়াখানায় থাকে ১২ বছরের মোমো। পাশের খাঁচাতে থাকে এক পুরুষ গিবন। দু’জনের মাঝে ইস্পাতের গরাদ। আর তাই প্রশ্ন, মোমো মা হল কী করে?
চিড়িয়াখানায় একা একটা খাঁচায় থাকত মোমো। কখনও পুরুষসঙ্গ পায়নি। সেই গিবনই যখন গর্ভধারণ করল, হতবাক জাপানের চিড়িয়াখানার কর্মীরা। খবর ছড়িয়ে পড়ল চারদিকে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুস্থ সন্তানের জন্ম দেয় বানর প্রজাতির সেই প্রাণী। কী ভাবে সন্তানধারণ করেছিল মোমো, অবশেষে তা প্রকাশ্যে এসেছে।
জাপানের নাগাসাকির কুজুকুশিমা চিড়িয়াখানায় থাকে ১২ বছরের মোমো। পাশের খাঁচাতে থাকে এক পুরুষ গিবন। কিন্তু দু’জনের মাঝে ইস্পাতের গরাদ। সেই গরাদ ভেদ করে সঙ্গম হওয়া সম্ভব নয়। তা হলে মোমো মা হল কী করে?
কারণ স্ত্রী গিবন মানুষের মতোই পুরুষ ছাড়া একা সন্তানধারণ করতে পারে না। মোমো, তার সন্তান এবং সম্ভাব্য চার বাবার চুল, মলের নমুনা নিয়ে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়।
গত সপ্তাহেই ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট এসেছে। গত শুক্রবার চিড়িয়াখানার তরফে সিএনএনকে সেই রিপোর্টের কথা জানানো হয়েছে।
কী রয়েছে রিপোর্টে? তাতে লেখা রয়েছে, মোমোর সন্তানের বাবা ৩৪ বছরের এক গিবন। নাম ইটো। তার বাস মোমোর খাঁচার পাশেই। দু’জনের মাঝে ইস্পাতের গরাদ রয়েছে।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, সেই গরাদের ছিদ্র দিয়েই সংসর্গ করেছে তারা। এক একটি ছিদ্রের ব্যাস ৯ মিলিমিটার।
মোমো এখন যত্নে নিজের সন্তান লালনপালন করছে। এখনও নাম ঠিক হয়নি সেই শিশু গিবনের। ওজন এখন দু’ কেজি। চিড়িয়াখানার ডেপুটি ডিরেক্টর হিডেকি হিসানো বলেন, ‘‘মূল্যবান একটি প্রাণের জন্ম হয়েছে। আমরা তাকে যত্ন করে পালন করব।’’
চিড়িয়াখানার সুপার জানিয়েছেন, এ ধরনের অযাচিত গর্ভধারণ রোখার জন্য কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে। দু’টি খাঁচার মাঝে কার্ডবোর্ড দেওয়া হয়েছে। এমনিতে গিবন বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী বলেই গণ্য হয়।
২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে একটি অ্যাকোয়ারিয়ামে প্রায় একই ঘটনা হয়ছিল। একটি রে সন্তানের জন্ম দিয়েছিল। ন’বছর ধরে ওই অ্যাকোয়ারিয়ামে সে কোনও পুরুষসঙ্গ করেনি। তার পরেও সন্তানের জন্ম হল কী ভাবে?
গবেষকরা জানান, পার্থিওজেনেসিসের মাধ্যমে সন্তানধারণ করেছিল সে। শুক্রাণু ছাড়াই নিষিক্ত হয়েছিল তার ডিম্বাণু। অনেক প্রাণীই এ ভাবে সন্তানধারণ করতে সক্ষম। শার্ক, সাপেরাও এ ভাবে সন্তানধারণে সক্ষম।
এসডব্লিউএসএস/২১৩৫
আপনার মতামত জানানঃ